মকবুল হোসেন মাধবদী নরসিংদী প্রতিনিধি ঃ গোপালদী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আক্তার হোসেনের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। সম্প্রতি সে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষককে না জানিয়ে স্কুল বন্ধ থাকা কালীন সময়ে ৬০ নং পাঠানের কান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বহু পুরনো মূল্যবান পাঁচটি গাছ কর্তন করে। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও প্রধান শিক্ষকের বাঁধা উপেক্ষা করে একটি গাছ ফেলে রেখে বাকি চারটি গাছ নিয়ে যায়।
এ নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে আলাপ করে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অভিযুক্ত কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এ নিয়ে কোন ধরনের প্রতিকার না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা।
সরেজমিনে বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ৬০ নং পাঠানের কান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের রাস্তার পাশ থেকে বহু পুরনো ৫টি মূল্যবান গাছ কেটে ফেলেছে স্থানীয় কাউন্সিলর আক্তার হোসেন। এর মধ্যে ৪ টি গাছ নিয়ে গিয়ে একটি মাঝারি সাইজের গাছ ফেলে রেখে গেছেন।
সাংবাদিকদের আগমনের খবর পেয়ে অনেকেই ছুটে এসেছেন কমিশনারের দাপটের কাছে তাদের অসহায়ত্বের কথা জানাতে।
এলাকাবাসী বলেন, দীর্ঘ দেড়যুগ ধরে পরম যত্নে বেড়ে ওঠা বিদ্যালয়ের বিশালাকৃতির দৃষ্টিনন্দন গাছগুলোর ছায়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থী ও পথচারীরা বিশ্রাম নিতেন। কিন্তু সেই গাছগুলোর উপর আক্তার কমিশনারের অশুভ দৃষ্টি পড়ে। সে কাউকে না জানিয়ে জোর করে গাছগুলো কেটে নেয়। এলাকাবাসী ও কমিটির পক্ষ থেকে তাকে মৌখিক বাঁধা দিলেও সে মানেনি । তার দাপটের কাছে আমরা অসহায়। আমরা তার উপযুক্ত বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ সাহিত হোসেন সোহেল বলেন, ম্যানেজিং কমিটি ও বিদ্যালয়ের কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ বিদ্যালয় বন্ধ থাকা কালীন সময়ে স্থানীয় কাউন্সিলর আক্তার হোসেন লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ের বহু পুরনো মূল্যবান পাঁচটি গাছ কেটে ফেলে। আমি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে এ সংবাদ পেয়ে এলাকাবাসীর মাধ্যমে বাঁধা প্রদান করি। কিন্তু সে কোন বাধা না মেনে চারটি গাছ নিয়ে যায়। এবিষয়ে জানতে তার মোবাইল ফোনে কল করলে সে অস্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং এবিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। পরে আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ভাইকে বিষয়টি অবগত করি। তিনি সব শুনে আমাকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিলে আমি আক্তার কমিশনারকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মনে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে যথার্থ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তারা যেন এবিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, কাউকে না জানিয়ে স্কুল বন্ধের দিন আক্তার কমিশনার লোকজন নিয়ে গাছ কাটতে আসলে বিদ্যালয়ের দপ্তরি সগির আমাকে বিষয়টি অবগত করেন। পরে আমি দপ্তরি সগির ও এলাকাবাসীর মাধ্যমে বাঁধা প্রদান করি। আক্তার কমিশনার আমাদের বাঁধার তোয়াক্কা না করে গাছগুলো কেটে নিয়ে যায়। পরে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির মাধ্যমে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টি অবগত করে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযুক্ত আক্তার কমিশনার বলেন, রাস্তা প্রশস্ত করনের জন্য মেয়রের নির্দেশে গাছগুলো কাটা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের গাছ কেটে সেই গাছগুলো কমিশনারের নেওয়ার এখতিয়ার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এব্যাপারে কথা বলতে আড়াইহাজার উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ও কথা বলা সম্ভব হয়নি।