ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি : নরসিংদী সদর উপজেলার আমদিয়া ইউনিয়নের কান্দাইল উত্তরপাড়া জামে মসজিদে শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) জুম্মার নামায চলাকালীন সময়ে ছুরি ও করোসিন তেল নিয়ে স্থানীয় এক মানসিক প্রতিবন্ধী হামলা চালায়। এ সময় কয়েকজন সাহসী মুসল্লীর সহযোগীতায় মসজিদ ও মুসল্লীগণ প্রাণে রক্ষা পায়।
তবে, এনিয়ে আতংক কাটেনি এলাকাবাসীর। এক অজানা শংকায় দিন পার করছে তারা।কারন, এ ঘটনাই তার প্রথম না। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে সে নানান অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় আতংক ছড়িয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানায়, ঘটনার দিন এলাকার মৃত ওসমান গনীর মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৬) জুম্মার নামাযের সময় মসজিদে গিয়ে মুসল্লীদের নামাযরত অবস্হায় সকল দরজা তালাবদ্ধ করে দেয়। পরে সে কোথাও হতে কেরোসিন তেলের গ্যালন এনে মুসল্লীদেরসহ মসজিদের বারান্ধায় তেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়। ইতিমধ্যে নামায শেষ হলে এ অবস্হায় মুসল্লীরা বাঁচার তাগিদে মসজিদে হুলস্থুল ও চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে।
কিন্তু প্রতিবন্ধী ইসমাইলের হাতে বড় আকারের (গরু কুরবানীর) ছুরি থাকায় কেউ তাকে থামাতে এগিয়ে আসার সাহস করতে পারেনি। এক সময় যখন ইসমাইল দিয়াশলাই জ্বালিয়ে মসজিদে আগুন দিতে যাবে তখন জীবন বাজি রেখে কয়েকজন মুসল্লী তার প্রতি এগিয়ে এসে বাঁধা দিয়ে দিয়াশলাই ও ছুরি নিয়ে নেয়। ফলে মুসল্লীসহ মসজিদটি আগুনে পোঁড়া হতে বেঁচে যায়। এদিকে এ ঘটনায় এলাকায় স্থানীয়দের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। বর্তমানে তাকে পারিবারিকভাবে ঘরে বন্ধি করে রাখা হয়েছে।
এলাকার এক মুসল্লী ও মাদ্রাসা শিক্ষক নিভির রহমান জানায়, ইসমাইলের এ ঘটনায় পুরো এলাকায় এখন আতংক বিরাজ করছে। আর এমন ঘটনা তার প্রথম না। এর আগেও এলাকায় নানান অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে। ইতিমধ্যে সে অন্তত দশবার নিজে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে। প্রতিবারই কোন না ভাবে সে রক্ষা পায়। এলাকায় শিশু বাচ্চাদের একলা পেলে আঘাত করতে করতে মেরে ফেলার চেষ্টা করে।
কয়েক মাস আগে একই এলাকার এক শিশুকে বাড়িতে একা পেয়ে মারাক্তক ধরনের মারধর করে। এ সময় পাশের বাড়ির এক মহিলা শিশুর চিৎকার শোনে দৌড়ে এসে শিশুকে বাঁচায়। তবে আঘাত মারাক্তক হওয়ায় শিশুকে স্থানিয় ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। এছাড়া সে বড়দেরও অনেক সময় মারধর করে। অভিযোগ রয়েছে তার মাকেও সে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছে বেশ কয়েকবার। এমনকি সে যে ডাক্তার তার চিকিৎসা করে তাকেও সে মারধরের চেষ্টা করেছে। মূলত তার ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে যা বুঝা যায় তা হলো তার মৃত্যূ বা খুন করার প্রতি নেশা রয়েছে।
সে কি সব সময় এমন করে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না। চিকিৎসা করলে কিছুদিন ভাল থাকে। কাজকর্ম করে। কিন্তু কয়েকদিন পেরুলেই হঠাৎ করে উন্মাদ হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে।