নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর মনোহরদী পৌর মেয়র আমিনুর রশিদ সুজনের ব্যক্তিগত সহকারী মাছুম হাসান শুভর বিরুদ্ধে নবদম্পত্তিকে আটক করে মারধর ও স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ উঠছে। এই ঘটনায় ভোক্তভোগীরা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযুক্ত মাছুম হাসান শুভকে আটক করে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় উপজেলার আনোয়ার সিএনজি স্টেশনে এই ঘটনা ঘটে।মাছুম হাসান শুভ মনোহরদী শহর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
রাতেই ভুক্তভোগী হারুনুর রশিদ দ্রুব বাদী হয়ে শুভসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৩ থেকে ৪ জনকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া পর শুক্রবার মামলাটি নথিভুক্ত করে আসামী শুভকে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন।
জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের বায়োজিদ গোস্তামী এলাকার মৃত আবুল বাশারের ছেলে হারুনুর রশিদ দ্রুব ঢাকার বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভির সহকারী পোগ্রাম প্রডিউসার হিসেবে কর্মরত আছেন। ৩ বছর পূর্বে তিনি গাজীপুরের কাপাশিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের বারাব গ্রামের পুলিশ সদস্য হারুনুর রশিদের মেয়ে রেশমা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ঢাকার ফার্মগেটে বসবাস করেন।
হারুনুর রশিদ দ্রুব জানান, তিনি গত বুধবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে শ^শুর বাড়ি গাজীপুরের কাপাশিয়ায় বেড়াতে আসেন। সোমবার দুপুরে স্ত্রীর জন্য থ্রীপিছ কিনতে ভগ্নিপতি মোসাদ্দেকের সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে মনোহরদী বাজারে যান। সেখান থেকে দুপুর ৩টার দিকে অটোরিক্সায় গ্যাস ভর্তি করতে তাঁরা আনোয়ার সিএনজি স্টেশনে যায়। গ্যাস ভর্তি শেষে সিএনজি স্টেশন থেকে বের হওয়ার সময় অতর্কিত ৭ থেকে ৮ জন যুবক তাঁদের উপর হামলা চালায়। এ সময় বিভিন্ন অশ্লীল বাক্যবান ও নানান ধরনের হুমকী দিতে থাকে। এক পর্যায়ে পৌর মেয়রের পিএস শুভ এসে তাদের কে নানান ধরনের প্রশ্ন করতে থাকে। প্রশ্নের উত্তর দিতে আপত্তি করায় দ্রুবের স্ত্রী রেশমার গালে থাপ্পর মারে সে। ওই সময় হামলাকারীরা রেশমার গলায় পরিহিত সোনার চেইন ও দ্রুবের হাতের দুটি সোনার আংটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
প্রকাশ্যে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও ভয়ে উপস্থিত কেউ এগিয়ে আসেনি। উল্টো হামলাকারীরা তাঁদেরকে বিয়ের কাবিন না দেখালে যেতে দিবেনা বলে সিএনজি স্টেশনের একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে মোবাইলে কাবিনের ছবি দেখালে তাঁদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
পরে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ দূরতে গিয়ে ভীতসন্তস্ত্র হয়ে ভুক্তভোগীরা জাতীয় জরুরী সেবা নাম্বার ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশি সহযোগীতা চান। এরপর পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
হারুনুর রশিদ দ্রুব বলেন, আমি জীবনে এমন ভীতিকর পরিস্থিতিতে কখনোই পরিনি। ওই সময়টুকু এখনো মনে হলে আমি আতংকে উঠি। তাঁরা আমার সামনে আমার স্ত্রীর গালে থাপ্পড় দিয়েছে। স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। তবে আমরা সাধারণ মানুষ আইনী জামেলা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছি।
জানতে চাইলে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে সিসিটিভি পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের সনাক্ত করেছে। বাকীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।