মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধিঃ নরসিংদীর মাধবদী বিরামপুরে পৈত্রিক বসত বাড়ির জমি নিয়ে কলহে সৎ মা ও আপন ভাইদের বাড়ি-গাড়ি ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসময় আহত হয়েছে বড় দুই ভাইসহ কয়েকজন। বাদীনীসহ আহতরা হলেন মাধবদী বিরামপুরের জয়নাল আবেদীনের ছেলে শাহীন মাহমুদ, জাকির হোসেন, সেলিম ভূইয়া, আঃ আওয়াল ও জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী হালিমা বেগম। গত ২৬ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে তিনটায় সাবেক মাধবদী ইউনিয়নের প্রয়াত ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন ওরফে জানু মেম্বারের ১ম সংসারের তৃতীয় ছেলে মোস্তফা মিয়া এই ভাংচুর করে বলে অভিযোগ করেছেন তারই সৎ মা ও আপন ভাইয়েরা। এই ঘটনায় ড্রাইভার মোস্তফাকে প্রধান আসামী করে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে নরসিংদী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারই আপন ভাবী নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির নিয়মিত সদস্য এ্যাড. শিউলী সরকার বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় বাদী মাধবদী বিরামপুরের মৃত জয়নাল আবেদীনের পুত্র মোস্তফা(৩৭), মোস্তফার পুত্র মিদুল(২০), মোস্তফার স্ত্রী জেসমিন(৩৪), বিরামপুরের ভাড়াটিয়া আসিফ(২০), আতাউরের পুত্র ভাসানী(৩৫), আবুলের পুত্র বাদল মিয়া(৩৫)’র নাম উল্লেখ করেছেন। তিনি মামলায় উল্লেখ করেন ঘটনার দিন সকল আসামী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভেকু মেশিন, লোহার পাইপ, রড, খনতি, শাবল, দা, ছুরিসহ ঘর ভাঙ্গার যন্ত্রপাতি নিয়া একযোগে ভিকটিমের বাড়ি ও গাড়ির উপর হামলা করে। তাতে বাধা দিলে ভিকটিমের উপরও হামলা করে। হামলায় ভেকু ড্রাইভার মোস্তফার আপন ভাই, ভাবী ও মাসহ কয়েকজন আহত হয়। পরে মোস্তফা বাড়ি-গাড়ি ভাংচুর করে টাকা ও স্বর্নালংকার নিয়ে চলে যায়। মোস্তফার আপন বড় ভাই শাহীন মাহমুদ বলেন আমি গাড়ি নিয়ে বাড়িতে আইসা দেখি সে (মোস্তফা) ভেকু দিয়া এগুলো ভাংতেছিল। আমাকে দেইখাই ভেকু গুরাইয়া গাড়ি শুদ্ধা, আমারে শুদ্ধা জাতাদা ধরে গাড়ি ভেঙ্গে ফেলে ও আমাকে ফেলে দেয়। তার ছেলে আমাকে গলায় চিপ দিয়া ধরছে। পরে আমাদের বাড়িঘর ভাংছে ও অনেক গালিগালাজ করছে। মোস্তফার সৎ মা হালিমা বেগম বলেন- আমি তারে না করছি সে আমারে ফালাইয়া দিছে। আমার পোলাডা ঘরে শুইয়াছিল তারেসহ ঘরডা ফালাইয়া দিছে। পরে পোলাডারে টাইন্না বাইর করছি। আমার ঘর ভাইঙ্গা দিছে এহন আমি কই থাকমু। স্থানীয় মাধবদী থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর এফ.আই.আর. এর আদেশ প্রদান করিলেও অদ্যবদি কোনো আসামীকে গ্রেফতার অথবা কোনো রকম আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পুলিশ কেনো আসামী গ্রেফতার করছেনা এমন প্রশ্ন রেখে বিচার পাওয়া নিয়ে সংকা প্রকাশ করেছেন ভিকটিম। তাই দ্রুত আসামীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন বাদীপক্ষ। ঘটনা সম্পর্কে বক্তব্য নিতে ঘটনারদিনই মোস্তফাকে কল করলে তিনি সরাসরি দেখা করছি বলে পরে আর দেখা করেননি। পরে আবারো মুঠোফোনে কল করে বক্তব্য দিতে বললে তিনি আবারো সাক্ষাতে বক্তব্য দিবেন বলে জানান। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ হেলাল উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি তাৎক্ষণিক বক্তব্য না দিয়ে পরে এই বিষয়ে বক্তব্য দিবেন বলে জানান। ঘটনা সম্পর্কে জানতে মাধবদী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রকিবুজ্জামানকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও ফোন রিসিভ হয়নি। উল্লেখ্য গত অক্টোবর-২০২২ইং তারিখে একই কায়দায় বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন পরিবার। সেই ঘটনায় মোস্তফার বড় ভাই শাহীন মাহমুদের স্ত্রী এডভোকেট শিউলী সরকার ও মোস্তফার সৎ মা হালিমা বেগম মাধবদী থানায় পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়েরের বিষয়ও নিশ্চিত করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারটির পারিবারিক কলহ অতি দ্রুত সমাধান না করা হলে বড় ধরনের একটি দুর্ঘনার আশংকা করছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও স্থানীয় লোকজন।