সুমন পাল:
নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্য থেকে একটি প্রতিষ্ঠান হলো হাজী আজগর আলী হাসপাতাল। এ হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে ভোক্তভোগী রোগীদের রয়েছে নানা রকম অভিযোগ। সম্প্রতি অপারেশন হওয়া রোগীর লিখিত অভিযোগ থেকে জানাযায়, কিডনীতে পাথরের নিয়ে চিকিৎসা করাতে যায় হাজী আজগর আলী হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত এম.বি.বিএস, এফ.সি.পি.এস (সার্জারী), স্পেশাল ট্রেইনড ইন অর্থোপেডিক্স ডাঃ রতন লাল সাহা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কিডনীতে পাথর আছে এবং অপারেশন করাতে হবে বলে জানান। পরে হাসপাতাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ নজরুল ইসলামের সাথে আলাপ আলোচনা করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া অপারেশনের যাবতীয় খরচ বাবদ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। গত ১০ মার্চ ২০২৪ইং তারিখে প্রায় ৩ ঘন্টা যাবৎ অপারেশনের পর ডাক্তার ২টি পাথর দিয়ে বলেন এই পাথর অপারেশন করে বের করা হয়েছে। এখন রোগী সুস্থ হয়ে যাবেন। ডাক্তারের দেওয়া পাথর দেখে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হলে রোগীকে অন্য হাসপাতালে আবারো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। কিন্তু পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে তারা হতবাক হয়ে যায়। কিডনীতে পাথরের জন্য ডাক্তার অপারেশন করেছে অথচ কিডনীতে পাথর আগের মতো রয়ে গেছে। তখন পরিবারের লোকজনের মনে প্রশ্ন জাগে অপারেশন করে যদি পাথর বেরই করা হয় তাহলে কিডনীতে এখনো কিসের পাথর? এই কথা জানার জন্য যখন পুনরায় হাজী আজগর আলী হাসপাতালে রোগীর লোকজন যায়, তখন হাসপাতালের ডাক্তার ও মালিক পক্ষ বলে আসলে অপারেশনের পরও কিছু পাথর থাকতে পারে। আপনারা কাউকে কিছু বলবেন না। আমরা পূনরায় বীনা খরচে আবারো অপারেশন করে দিব। এক পর্যায়ে ডাঃ রতন লাল সাহা ও হাসপাতালের মালিক পক্ষ ঢাকা পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবারো অপারেশন করতে হবে বলে জানায়। দ্বিতীয়বার অপারেশনে খরচ লাগবে ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তখন রোগী ও তার পরিবারের লোকজন এত টাকা দিতে পারবে না বলে জানানোর পরে তারা কয়েক দফায় ৬০ হাজার টাকা লাগবেই বলে জানাই। তখন তাদের বলা হয় আপনারা চিকিৎসায় ভুল করেছেন এখন আমরা টাকা দিব কেন? আমরা আপনাদের সাথে ২৫ হাজার টাকা নির্ধারন হয়েছে সেই টাকাই দিব। আর যত টাকা লাগে আপনারা দিবেন। আপনারা আমার অপারেশন করবেন কিনা বলেন? এই কথার পর তারা সম্মত হয়ে ডাক্তার নিজেই সকল ব্যবস্থা করে গত ১৭ এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখে রোগীকে ঢাকা পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাঃ রতন লাল সাহা দ্বিতীয়বার একই সমস্যার জন্য অপারেশন করে। অপারেশনের পর কিডনী থেকে পাথর বের করে পরিবারের লোকজনকে দেওয়া হয়। পরের দিন ১৮ এপ্রিল ঢাকা পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৬১ হাজার ১শত ৯৬ টাকা বিল দিতে বলে এবং রোগী বাসায় নিয়ে যেতে বলে। বিল পেয়ে রোগী সহ পরিবারের লোকজন ঢাকা পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলে তাদেরকে শুধুমাত্র ২৫ হাজার টাকা দিতে বলা হয়েছে। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে রোগী নিয়ে যেতে হলে সম্পূর্ণ টাকা দিয়েই নিয়ে যেতে হবে। চিকিৎসক রতন লাল সাহা ও মাধবদী আজগর আলী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তখন তারা বলে বিল দিয়ে আপনার রোগী বাসায় নিয়ে যান। এমতবস্থায় রোগীর লোকজন আত্মীয়-স্বজন থেকে ফোন দিয়ে মোবাইলে বিকাশে লোন নিয়ে ঢাকা পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাউন্টারে বিল পরিশোধ করে ছুটি দেওয়ার প্রায় ৭ ঘন্টা পর রোগী নিয়ে বের হয়। রোগীটি একজন প্রবাসী। আগামী ০৩ মে মালয়েশিয়া ফ্লাইট। কিন্তু শারীরিক এমন অবস্থায় মালয়েশিয়া যাওয়া এখন হুমকির মুখে। রোগীর সাথে চিকিৎসক রতন লাল সাহা ও মাধবদী আজগর আলী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতারণা করে ও ভুল চিকিৎসা করে একাধিকবার অপারেশন করে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রন্থ করে। এমনটিই অভিযোগ করেছে রোগী আবু সাঈদ।