
প্রতিনিধি নরসিংদী : গেমিং ল্যাপটপের জন্য শিশু অপহরণ ও হত্যাকান্ডের মূল হোতাসহ গ্রেফতার দু’জন ও আলামত উদ্ধার করেছে নরসিংদী জেলা পুলিশ।
টিভিতে সিআইডি ও ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়াল দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে গেমিং ল্যাপটপ কেনার টাকার জন্য সিয়াম ও রাসেল দুই বন্ধু অপহরণের দু’দিন দিন আগে গেমিং ল্যাপটপ কিনে ইউটিউবে গেম লোড করে টাকা উপার্জনের জন্য মালয়েশিয়া প্রবাশী জামাল উদ্দিনের আট বছরের শিশু ইয়ামিনকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত রবিবার (২৮ নভেম্বর) ইউপি নির্বাচনের দিন উত্তর-বাখরনগর মধ্যপাড়া শিশু ইয়ামিনের বাড়ীর পাশে দোকানের সামনে হতে সিয়াম ও রাসেল দুইজন খেলার ছলে ইয়ামিনকে সিয়ামের বাড়ীর নির্জন রুমে নিয়ে যায়।
সিয়ামের বাড়ীতে ইয়ামিনকে অপহরণ করার পর মুখ, হাত, পা বেধে বস্তায় ভরে রেখে ইয়ামিনের মায়ের কাছে স্ক্রিপ্টেডবায়া এ্যপস ব্যবহার করে ভিপিএন এর মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। জানা যায় যে, তারা সিআইডি ক্রাইম পেট্রোল দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে মোবাইলে স্ক্রিপ্টেডবায়া এ্যপস ব্যবহার করে ভিপিএন এর মাধ্যমে ফোন করে মুক্তিপনের টাকা চায়। পরবর্তীতে মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে অপহরণের দিন সন্ধ্যা বেলায় হাত-পা বাধা অবস্থায় বালিশ চাপা দিয়ে সিয়াম এবং রাসেল ইয়ামিনকে হত্যা করে। হত্যার পর ইয়ামিনের লাশ হাত-পা বেধে বালিশ চাপা দিয়ে গোয়াল ঘরের কারের উপরে বস্তাবন্ধি করে রাখে। উক্ত ঘটনার ০৪ দিন পর বস্তাবন্ধি লাশ রাতের অন্ধকারে ডোবার মধ্যে ফেলে আসে।
উক্ত ঘটনার তিন দিন পর বাদী সামসুন্নাহার বেগম রায়পুরা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। পরে রায়পুরা থানাধীন উত্তর বাখরনগর এলাকায় ইয়ামিন (০৮) এর মৃতদেহ পাওয়া যায়।
পরে নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের নির্দেশনা মোতাবেক মোঃ আবুল বাসার , অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), নরসিংদীর নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), নরসিংদীর এসআই মোহাম্মদ তানভীর মোর্শেদ, এসআই কবির উদ্দিন, এসআই মোঃ সফিউদ্দিন ও রায়পুরা থানা পুলিশের এসআই জহিরুল হক সাড়াশি অভিযানে নামে।
(০৩ডিসেম্বর) দিবাগত রাত অর্থাৎ শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) তারিখ রাত ৪টায় রায়পুরা থানাধীন উত্তর বাখরনগর এলাকা হতে আসামী সিয়াম উদ্দিনকে এবং রায়পুরা থানাধীন পিরিজকান্দি এলাকা হতে আসামী রাসেল মিয়াকে আটক করে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত স্কচটেপ ও বালিশ এবং অপহরণ ঘটনায় ব্যবহৃত মোবাইল ও সিম আলামত হিসেবে উদ্ধার করে তাদের অত্র মামলায় গ্রেফতার করেন।
প্রাথমিক তদন্তকালে জানা যায়, আসামীদের স্বভাব চরিত্র ভালো নয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে স্বীকার করে পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় ১। মোঃ সুজন মিয়া (২৪), পিতা মৃত- আসাদ মিয়া, ২। কাঞ্চন মিয়া (৫৪), পিতা মৃত- রাজা মিয়া, উভয় সাং- উত্তর-বখরনগর, থানা- রায়পুরা, জেলা-নরসিংদীদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়। আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও পুলিশ প্রেস ব্রিফিংয়ে জানায়।