আল্লায় যেনো শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়ে রাখেন
প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ঘর পেয়ে খুশি অসহায় পরিবারগুলো
ঘরগুলোতে রয়েছে পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও
শরীফ ইকবাল রাসেল,নরসিংদী:
“আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মুজিব শত বর্ষে নরসিংদী সদর উপজেলার ভিটে বাড়িহীন অসহায় ও দুস্ত জনগণ আজ শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়ে মহা খুশি। তাদের কাছে যেনো ঘরগুলো স্বপ্নের ঠিকানা। ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া এসব উপহার।
smart
‘একটি মানুষও গৃহহীন থাকবেনা’ প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর মুখে হাঁসি ফুটাতে আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে মাথা গোজার ঠাঁই পাচ্ছেন দরিদ্র পরিবারগুলো। দিনের পর দিন উন্মুখ হয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলো এ পরিবারগুলো। কবে হবে তাদের স্বপ্নের ঠিকানা মাথা গোজার ঠাঁই। অবেশেষে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় তাদের আশা পুরণ হতে যাচ্ছে। নির্মিত হয়েছে দুই কক্ষবিশিষ্ট তাদের জন্য আধাপাকা ঘর। লাল আর সবুজের সমারোহে উন্নত মানের ঢেউটিনের চালাসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ টয়লেট, রান্নাঘর ও স্টোর রুমও রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থাও করে দেয়া হয় প্রতিটি ঘরে। এছাড়া নরসিংদী সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী মোরশেদ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ আলম মিয়া নিয়মিত এসকল বাড়ি তদারকি করছেন। প্রকল্পে বসবাসরত অসহায় মানুষকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের বিষয়েও কাজ করছেন তারা। আর এসব কল্পনাতীত স্বপ্নের ঠিকানা পেয়ে খুশি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারগুলো।
smart
সদর উপজেলার আমদিয়া ইউনিয়নের কান্দাপাড়া প্রকল্পে বসবাসরত প্রতিবন্ধী শাহিনুর আক্তার একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী, একটি দরিদ্র পরিবারে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়ার কিছুদিন পর স্বামী মারা যায়। স্বামীর পরিবারের পক্ষে শাহিনুরকে ছেলে সহ লালন পালনের ক্ষমতা না থাকায় বাবার বাড়ি চলে আসেন শাহিনুর। এই মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে মহা খুশি এই শাহিনুর। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘর না পেলে হয়তো তার জীবনে অন্যেও বাড়িতেই কাটাতে হতো বলে জানান শাহিনুর।
একই প্রকল্পে বসবাস করেন খাদিজা নামের আরেক বিধবা। বাবা মা অসহায়, যারফলে বেশী লেখাপড়া করতে পারেনি সে। এরইমধ্যে বাবা তাকে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেলে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতে হয় অন্যের বাড়িতে। আজ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে মহাখুশি এই খাদিজা। এখানে থাকে মা আর সন্তানটিকে নিয়ে। আর বলেন আল্লায় যেনো শেখ হাসিারে বাঁচিয়ে রাখেন।
smart
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে বসবাস করেন মরনী রানী নামে এক বিধবা। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মারা যায় তার বাবা মা। এরপর আশপাশের লোকজন লালন পালন করে বিয়ে দেয়।
এরই মধ্যে স্বামীও মারা যায়। ফলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে চাকরী করে জীবন বাঁচায় মরনী। কিন্তু বসবাস করতে হয় অন্যের বাড়িতেই। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে আজ তিনি অনেক খুশি। তাই তিনি সারা জীবন প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন বলে জানালেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এসব ঘরে বসবাস করেন আফাজ উদ্দিন নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। যিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছেন। তাঁরও কোন নিজস্ব বাড়ি ঘর ছিলনা। তিনিও আজ সাদরেই গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর।
smart
এঘরেই বসবাস করেন রত্না নামে এক তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি। তার কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে শিল্পাঞ্চল মধাবদীতে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ‘ত্রি নয়ন’ নামে একটি বিউটি পারলারের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।
এমন করেই বসবাস করছে এই প্রকল্পের ঘরে বসবাসরতরা। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এসব ঘরে, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, মুক্তিযোদ্ধা ও তৃতীয় লিঙ্গের অসহায় জনগণ বসবাস করছে। যাদের জীবনে এমন ঘর তৈরী করার মতো ক্ষমতা নাই। আর তারা এসব ঘর পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য আজ দোয়া করছেন বলে জানলেন স্থানীয় আমদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন ভূইয়া রিপন।
ঘরগুলোর বিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: শাহ আলম মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রীর একটি সেবাধর্মী কাজ হচ্ছে এই উপহারের ঘর। যারফলে নরসিংদীর জেলা প্রশাসকের নিদের্শনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে প্রতিটি ঘর যেনো সঠিক মান, ভালো মানের উপকরণ ব্যবহার করা হয় তারজন্য আমি নিজে উপস্থিত থিকে কাজ করিয়েছি। এছাড়া নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এই ঘরগুলোতে বৈদ্যুতিক ও পানির ব্যবস্থা করা হয়। করোনাকালীন তাদের ঘরে খাদ্যের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহায়তায় এখানে ফলজ গাছের চারা রোপন করা হয়েছে।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে নরসিংদী সদর উপজেলায় সরকারীভাবে ২৭টি ঘর নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমধাপে ৪টি দ্বিতীয় ধাপে ২৩টি। তৃতীয় ধাপে আরো কিছু ঘর তৈরীর কাজ চলছে। আর এসব ঘরগুলো অসহায় মানুষের স্বপ্নে ঠিকানায় পরিণত হবে এমন প্রত্যাশা তাদের।
#