মুহাম্মদ মুছা মিয়াঃ নরসিংদীর মাধবদীতে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের উপর নির্মানাধীন সেতুর পাইলিং এর জন্য গর্তের ফলে নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই তলা ও তিন তলা ভবন ধ্বসের শংকা দেখা দিয়েছে। এনিয়ে শংকায় আছে বিদ্যালয়টির কমিটি, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী। দ্রæত ব্যবস্থা না নিলে নদী গর্ভে বিলিন হতে পারে স্কুলের মূল ভবন। কয়েক বছর পূর্বে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের খনন কাজের সময় বিদ্যালয় সংলগ্ন নুরালাপুর ও গদাইরচর গ্রামের মধ্যে সংযোগ সেতুটির পিলারের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সেতুটি ধ্বসে যায়। পরে কয়েকধফায় সেতু নির্মানের কাজ শুরু করলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ সম্পন্ন না করেই চলে যায়। সর্বশেষ গত বছর পুনরায় সেতু নির্মানের কাজ শুরু হলে নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সেতু সংলগ্ন স্কুলের টিনসেড বিল্ডিংটি ভেঙ্গে দিতে বলে। তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সেতুর কাজ করার কথা জানায়। পরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে মর্মে স্কুলের টিনসেড বিল্ডিং ভাঙ্গার অনুমতি পায়। পরে সেখানে সেতুর পাইলিংয়ের কাজে গর্ত করে সেতু নির্মান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু হঠাৎ শুনা যাচ্ছে বর্তমানে কর্মরত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিও কাজ ফেলে চলে গেছে। এমতবস্থায় গত কয়েকদিন পূর্বের বৃষ্টিতে স্কুলের বিদ্যালয়টির মূল ভবনের ফাউন্ডেশনের পিলারের নিচ থেকে মাটি ধ্বসে নদীতে পরে যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোন সময় ভবনটি হেলে পরতে পারে। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে ভবনটি ধ্বসে যাওয়ার শংকা প্রকাশ করছে সকলে।
এবিষয়ে নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফেরদৌস কামাল জানান প্রথম যখন সেতুটি ভেঙ্গে পরে তখন সেতুর কাজ করার সময় স্কুলের টিনসেড বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরে তৎকালীন চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম ফয়সাল গাছের গুড়ি দিয়ে প্রোটেক্শন দেয়। কিছুদিন পর অজ্ঞাত কারণে সেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ রেখে চলে যায়। এখন আবার যখন নতুন করে কাজ করতে আসে তখন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বর্তমান চেয়ারম্যান সাহেবসহ স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কাজ করবেন বলে জানান। সিদ্ধান্ত হওয়ার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অরক্ষিতভাবে পাইলিংয়ের জন্য টিনসেড বিল্ডিং ভেঙ্গে গর্ত করে। কিন্তু বর্তমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানও কাজ রেখে চলে যায়। গত রেমালের ঝড়-বৃষ্টির সময় টিনসেড বিল্ডিং ধ্বসে দুইতলা বিল্ডিং পর্যন্ত মাটি সরে গেছে। বর্তমানে দুই তলা বিল্ডিংটি ঝুকির মধ্যে রয়েছে।
নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আইনুল হক জানান- সেতু নির্মানের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আসলে আমরা স্কুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে সেতুর কাজ করতে বলি। পরে বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন সেতুর কাজ শেষে নিজে স্কুলের টিনসেড বিল্ডিংটি করে দিবেন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করবেন বলেন। এখন আবারও সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন যেহেতু বৃষ্টির মৌসুম যেকোন সময় স্কুলের দুইতলা ভবনটি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন মাটি ভেঙ্গে দুইতলা ভবনটির কাছাকাছি চলে গেছে। এখন যদি দ্রæত ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে ভবনটি একাংশ ভেঙ্গে পরতে পারে। সেজন্য উর্ধ্বোতন কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।
বিষয়টি জানতে নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান মোঃ আরিফ হোসেনকে মোবাইলে কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা সুলতানা নাসরিনের মুঠোফোনে কল দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মুহাম্মদ মুছা মিয়া
মাধবদী, নরসিংদী।
০১৯১২-৪৮৫০৮৫