শরীফ ইকবাল রাসেল,নরসিংদী:
নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় তৈলবীজ হিসেবে বপন করা সূর্যমুখী বাগান এখন হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের বিনোদন কেন্দ্র।এরফলে একদিকে কৃষকরা তৈলবীজের পাশাপাশি বাগানে আসা দর্শনার্থীদের কাছ থেকেও পাচ্ছেন বাড়তি আয়।এতে খুশি কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
দেশে আদর্শ মানের ভোজ্য তেল হিসেবে সূর্যমূখী বাগানের পরিধি যেমন বাড়ছে, তেমনি এটিকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্থানীয়রা। আর কৃষকরাও সূর্যমূখী বাগান থেকে ভোজ্যতের পাশাপাশি বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের কাছ থেকেও একটি আয় হচ্ছে। আর নরসিংদীর চরসিন্দুরের ব্রীজের পাশে শীতলক্ষার পূর্বপাড়ে বিশালাকার চরাঞ্চল। এখানে প্রায় হাজার বিঘা চরের জমি বছরের একটি সময় পতিত পড়ে থাকে। তাই এই জমিকে কাজে লাগানোর জন্য স্থানীয় মাজহারুল ইসলাম নামে কৃষি বিভাগের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এই এলাকায় প্রথমবারের মতো ৫বিঘা জমিতে চাষ করলেন সূর্যমূখীর। এই বাগানে ফুল ফোটার সাথে সাথেই আসতে শুরু করেছে দর্শনার্থী। তাই বাগান রক্ষা ও দর্শনার্থীদের উপভোগের জন্য বাগানে দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই সূর্যমূখী বাগান করে একদিকে কমপুজিতে বেশী লাভ, অপরদিকে বাগানগুলো বিনোদন কেন্দ্রে পরিনত হওয়ায় আসছে বাড়তি আয়। আর এই বাগান ঘুরতে এসে খুশি ভ্রমন পিপাষুরা।
কৃষক মো: মাজহারুল ইসলাম জানান, তাঁর পরিবারের ৫জন সদস্য কৃষি বিভাগের সাথে জড়িত। তিনি দুবছর হয় অবসরে এসেছেন। অবসরে এসেই গতবছর পরীক্ষামূলক নরসিংদীতে সূর্যমূখীর বাগান করেছেন। সেখানে তিনি বাগান করে সফলতাও পেয়েছেন। তাই এবার নিজ বাড়িতে এসে দেখেন শীতলক্ষার পাড়ে গড়ে উঠা বিশারাকার চড় পতিত পড়ে আছে। তিনি এই জমিগুলো কাজে লাগানোর লক্ষ্যে এখানে জমি ভাড়া নিয়ে প্রথমবারের মতো ৫বিঘা জমিতে গড়ে তুলেন সূর্যমূখীর বাগান। বাগান থেকে তৈলবীজ সংগ্রহের আশায় গড়ে তোলা হলেও এখন স্থানীয়দের বিনোদন কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত সকল বয়সের নারী পুরুষ এখানে ঘুরতে ছুুটে আসেন দলবেধে। বাগান ঘুরে নিজের মোবাইল দিয়ে ছবিও তুলেন দর্শনার্থীরা। এবার ভালো ফলন পাবেন বলে আশাবাদী তিনি। তার মূল লক্ষ তার এই সূর্যমূখীর বাগান দেখে যেনো আগামীতে এই চরে সকলেই সূর্যমূখীর বাগান করে।
করোনার এই সময়ে সকল প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাড়িতে এক ঘেয়েমি সময়টাকে পার করার জন্য এই সূর্যমূখীর বাগান ঘুরতে আসেন বলে জানান দর্শনাথীরা। তারা বাগান ঘুরে ছুবি তুলে কিছুটা হলেও আনন্দের মধ্যে কাটাতে পারেন বলে জানান তারা।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন রতন জানান, এই বাগান দেখে যেনো চরের অন্যান্য কৃষকরাও আগামীতে সূর্যমূখীর বাগান করেন সেই লক্ষ্যে কৃষকদের উৎসাহ দেয়ার জন্য নিজেও বাগান পরিদর্শন করেছেন। আর এই চরে বাগান করার জন্য কৃষকদের সহায়তারও আশ্বাস দেন।
পলাশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু নাদির আহমেদ ছিদ্দিকি জানান, সূর্যমুখীর বীজের মাধ্যমে যে পরিশোধিত তেল পাওয়া যায় তা স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর যারফলে বাজারে এর চাহিদা প্রচুর রয়েছে। সূর্যমূখীর বীজ থেকে যে তেল পাওয়া যায় তাতে মানুব দেহের ক্ষতিকর কোন বিষয় থাকেনা। কিন্তু বিদেশ থেকে আমদানীকৃত তেল যে শতভাগ বিমুদ্ধ তাও কিন্তু বলা যাচ্ছেনা। তাই শরীরের জন্য উপকারী হিসেবে সূর্যমূখীর বীজ থেকে পাওয়া তেল মানবদেহের জন্য স্বাস্থ্যকর। যারফলে মানুষ কিন্তু এখন সয়াবিন তেল তেকে সওে আসছে। সরিষার তেলের পাশাপাশি সূর্যমূখীর তেলও ব্যবহার শুরু করেছেন। তবে এই তেলটা পর্যাপ্ত পরিমানে না থাকায় বাধ্য হয়েই ানেকে সরিষা বা সয়াবিন ব্যবহার করছেন। এছাড়া বর্তমানে এটাকে দর্শনীয় স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্থানীয় ভ্রমন পিপাষুরা। তবে এর চাষাবাদ নরসিংদীতে ব্যাপক না হলেও দিন দিন এর চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সূর্যমূখী বাগান করে ভোজ্য তেলের পাশাপাশি স্থানীয় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে ভ্রমন পিয়াষুদের আনন্দ দানের মাধ্যমে কৃষকের অতিরিক্ত অর্থ আয় হবে। এমনটাই মনে করছেন কৃষি বিভাগ।