রাকিবুল হাসানঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের প্রকাশিত ফলাফলে ৩.৯০ পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন সোহাগ। কিন্তু তা দেখে যাওয়া হলো না তার। গেলো বছর ডিসেম্বর মাসে পরীক্ষা শেষ করে যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিভে যায় তার জীবনপ্রদীপ। সোহাগ মিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের এমবিএর শিক্ষার্থী ছিলেন। বিবিএর ফলাফলেও বিভাগে ২য় স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি। সোহাগের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার বালুসাইর গ্রামের বেপারীপাড়াতে । বাবা হাবিবুর রহমান ও মা নিলুফা বেগমের প্রথম সন্তান ছিলেন তিনি। বুধবার (২৫ মে) বিভাগের ফলাফল প্রকাশের পর উচ্ছ্বাসের বদলে সহপাঠী স্মরণে অনেকটা ম্রিয়মাণ পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিভাগে। বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর (শুক্রবার) এমবিএর প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষে গ্রামের বাড়ী নরসিংদী যাচ্ছিলেন সোহাগ। ভোররাতে ন্যাশনাল ট্রাভেলস বাসটি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কে এসে উল্টে যায়। এতে আহত সোহাগকে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় সোহাগসহ আরও ৩ জন নিহত হন। আহত হন আরও ১০ জন। ফল প্রকাশের পর স্মৃতিচারণ করে সোহাগের সহপাঠী বেলাল হোসেন বিল্পব বলেন, তার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই আমাদের কাঁদায়। ব্যক্তিগতভাবে সোহাগ অত্যন্ত বিনয়ী ছিল। আমাদের সব বন্ধু ও ছোট-ভাই বোনদের কাছে খুব প্রিয় ছিল। আজ এমবিএর রেজাল্ট দিল। সোহাগ মেধা তালিকায় ১ম হয়েছে, কিন্তু সেটি দেখে ওর কথা আরও বেশি মনে পড়ছে। সোহাগের বাবা-মায়ের কাছে ওর এত ভালো ফলাফলের কথা জানানোর সাহস পাচ্ছি না। আল্লাহ ওকে ভালো রাখুন। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মায়েন উদ্দিন বলেন, রেজাল্ট প্রকাশের পর আমাদের কষ্টটা আরও বেড়ে গেল। দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিল সে। ভালো ফলাফলে সে পরিবারের হাল ধরার পাশাপাশি দেশের জন্য অবদান রাখতে পারত। কিন্তু একটা মানবসৃষ্ট কারণে আমরা তাকে হারালাম।