1. masudkhan89@yahoo.com : admin :
  2. narsingdirawaaz1@gmail.com : Narsingdir Awaaz : Narsingdir Awaaz
শিরোনাম : :
মাধবদীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড, ক্ষতির পরিমান কোটি টাকা “ভুয়া ডিবি পরিচয়ে’’ ডাকাতির ঘটনায় ০১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১ মাধবদীতে ছাত্রদলের আয়োজনে এসএসসি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ মাধবদীতে বর্বর ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল চাচীর সাথে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু নরসিংদীর মাধবদীতে আশিকুর রহমান পাভেল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে নগদ অর্থ ও সকালের নাস্তা বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। মাধবদীতে মাদক বিরোধী প্রতিবাদ সভা ও গণ মিছিল অনুষ্ঠিত মাধবদীতে এসএসসি পরিক্ষার প্রথম দিনে অনুপস্থিত ১৩ মাধবদী বাজার ব্যবসায়ী সঞ্চয় সমিতির কমিটি গঠন, সভাপতি দেলোয়ার, সম্পাদক আইনুল, কোষাধ্যক্ষ ছাদেক শেখেরচর বাজারে আদালতের আদেশ অমান্য করেও দোকান ঘর দখলের পায়তারা

সুনাগরিক সমৃদ্ধ জাতি গঠনে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব

  • আপডেট সময়: রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৩৪ জন দেখেছেন

– মোঃ মাহফুজুর রহমান –
প্রাথমিক শিক্ষা একজন মানুষকে সচেতন, দায়িত্বশীল সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ ভুমিকা পালন করে থাকে । বর্তমান সভ্য সমাজে পরিপূর্ন মানুষ হওয়ার জন্য প্রাথমিক শিক্ষার সকল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন করা একান্ত জরুরী । বর্তমান সমাজে বিদ্যমান সামাজিক অবক্ষয়ের পেছনে উল্লেখযোগ্য কারন হলো : প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করলে একজন শিক্ষার্থী যতটুকু জ্ঞান ,দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করার প্রয়োজন ততটুকু করতে না পারা । সাধারনত প্রাথমিক শিক্ষা বলতে সাধারন মানুষ মনে করে প্রথম শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নির্দিষ্ট পাঠ্যপুস্তকের সীমাবদ্ধ পুথিঁগত জ্ঞান । কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা এই পুথিঁগত বিদ্যায় সীমাবদ্ধ নয় । এর কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে ,যা আমাদের সকলের জানা প্রয়োজন । সাধারন মানুষের জানার সুবিধার্থে নি¤েœ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো উল্লেখ করা হল-
প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য
শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক, মানবিক, নান্দনিক, আধ্যাত্মিক ও আবেগিক বিকাশ সাধন এবং তাদের দেশাত্ববোধে, বিজ্ঞানমনস্কতায়, সৃজনশীলতায় ও উন্নত জীবনের স্বপ্নদর্শনে উদ্বুদ্ধ করা।
প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য:
১. আল্লাহ তা’য়ালা/সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস ও শিশুর মধ্যে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করা এবং সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।
২. শেখার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির মাধ্যমে শিশুর কল্পনা-শক্তি, সৃজনশীলতা ও নান্দনিকবোধের উন্মেষে সহায়তা করা।
৩. বিজ্ঞানের নীতি-পদ্ধতি ও প্রযুক্তির জ্ঞান অর্জন, সমস্যা সমাধানে তার ব্যবহার এবং বিজ্ঞানমনস্ক ও অনুসন্ধিৎসু করে গড়ে তুলতে সহায়তা করা।
৪. ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতার বিকাশ এবং নিজেকে প্রকাশ করতে সহায়তা করা।
৫. গাণিতিক ধারণা, যৌক্তিক চিন্তা ও সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা অর্জনে সহায়তা করা।
৬. সামাজিক ও সুনাগরিক হওয়ার গুণাবলি এবং বিশ্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনে সহায়তা করা।
৭. ভালো-মন্দের পার্থক্য অনুধাবনের মাধ্যমে সঠিক পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করা।
৮. অন্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া, পরমতসহিষ্ণুতা, ত্যাগের মনোভাব ও মিলেমিশে বাস করার মানসিকতা সৃষ্টি করা।
৯. প্রতিকূলতা মোকাবেলার মাধ্যমে শিশুর আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করা।
১০. নিজের কাজ নিজে করার মাধ্যমে শ্রমের মর্যাদা উপলব্ধি ও আত্মমর্যাদা বিকাশে সহায়তা করা।
১১. প্রকৃতি, পরিবেশ ও বিশ্বজগৎ সম্পর্কে জানতে ও ভালবাসতে সহায়তা করা এবং পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করা।
১২. নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনে সচেষ্ট করা।
১৩. জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ব্দ্ধু করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে ভালোবাসতে সাহায্য করা।

একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবন শেষ করে যখন উচ্চশিক্ষা অথবা কর্ম জীবনে প্রবেশ করে তখন তার আচরণ সমাজ জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে , এজন্য প্রয়োজন নৈতিক শিক্ষা । সমাজের সকল শ্রেনি পেশার মানুষের সাথে মিলেমিশে চলতে পারা ,সহনশীলতা ,অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া ,ভালোমন্দ বিচার বিশ্লেষন করে সঠিক ভাবে চলতে পারা এবং অন্যকেও সঠিক পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করা ,প্রভৃতি গুনাবলী অর্জন করার জন্য প্রয়োজন প্রাথমিক শিক্ষা যার মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মান সম্ভব । এই লক্ষ্যে শিক্ষক ,সুশীল সমাজ ,সচেতন নাগরিক এবং রাষ্ট্র কে সকল শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় এনে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন আরো বেগবান করা প্রয়োজন । একটি টেকসই ভিত্তি ছাড়া যেমন কোন ইমারত গঠন করা যায় না ,তেমনি প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে সুশিক্ষিত হওয়া যায় না ।
এটা উপলব্ধি করে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শেখ হাসিনার হাত ধরে বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা বাংলাদেশের অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন অনন্য উচ্চতায় । তাই এখনই সময় শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়মুখী করা ।
বিগত কয়েক বছরে করোনাকালীন সময়ে প্রাথমিক শিক্ষায় শিশুর ঝরেপড়ার হার কিছুটা বেড়েছে ,সেই সাথে অপরিকল্পিত অনুমোদন বিহীন আঞ্চলিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি পেয়েছে যা রাষ্ট্রের জন্য কল্যানকর নয় ।
সরকারি প্রাথমিক ব্যাতীত অন্যকোন বে -সরকারি বে -নামের প্রতিষ্ঠান শিশুর সুষম বিকাশ নিশ্চিত করতে পারেনা । বর্তমান সময়ের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন শুধু শিক্ষক নন, প্রতিটি শিক্ষক একজন শিশু বশিষেজ্ঞ । বর্তমানের প্রাথমিক শিক্ষকগন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষনা ইনষ্টিটিউশন থেকে ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত । এই প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন এখন বিশ্বমানের । এছাড়াও প্রযুক্তি ব্যাবহার করে নিবিড় তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে সরকার প্রতিটি বিদ্যালয় মনিটরিং করে প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষকদের সারা বছর প্রশিক্ষন দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষাকে দিন দিন সমৃদ্ধ করছে , বিশেষ করে ইংরেজি বিষয়ের জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিল এর প্রশক্ষিনরে মাধ্যমে সরকার শিক্ষকদের সমৃদ্ধ করছে।
বর্তমান সরকার উপলব্ধি করেন শিক্ষার জন্য ব্যায় খরচ নয় বিনিয়োগ , তাই তো শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো এখন নান্দনিক দৃষ্টিনন্দন যেখানে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে আকর্ষনীয় পাঠদান পরিচালিত হচ্ছে ।
গত দশ বছর আগেও বাংলাদেশে স্কুলগামী ছাএ -ছাএীর হার ছিল খুব কম । বিশেষ করে মেয়েদের হার ছিল আরোও কম । সরকারের নানামূখী পদক্ষেপ যেমন- জানুয়ারীর প্রথম দিনে নতুন বই প্রদান ,বিনা বেতনে শিক্ষা ,মিড ডে মিল ,উপবৃত্তি ,দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ,বাল্য বিবাহ রোধ,আকর্ষনীয় বিদ্যালয় প্রভৃতি কারনে ঝরে পড়ার হার এখন প্রায় শূন্যের কোঠায় ।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন আর বই চাপিয়ে দিয়ে মুখস্থ বিদ্যাকে প্রাধান্য না দিয়ে সুনাগরিক গঠনে কাজ করছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো । আগামীর বাংলাদেশ হয়ে উঠবে আরও বেশি বিনয়ী এবং মৌলিক মানবীয় গুনাবলী সম্পন্ন । বর্তমান প্রাথমিক শিক্ষায় কিভাবে রাস্তা পারাপার হতে হয় ,পশু পাখির প্রতি কি আচরন করতে হয় ,পরিবারে বাবা মা কে কিভাবে সাহায্য করতে হয় ,পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কিভাবে থাকতে হয় ,কি ভাবে খেতে হয় , কার সাখে কি আচরন করতে হয় এসব শিক্ষা দেওয়া হয় । মোট কথা আদর্শ – নীতি নৈতিকতা এবং বোধ সম্পন্ন মানুষ হওয়ার শিক্ষা এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ব্যাবহারিক ও তাত্ত্বিক ভাবে দেওয়া হচ্ছে । না বুঝে মুখস্থ নয়, যেন তারা বড় হয়ে বিনয়ী হয় ,দেশপ্রেমিক হয় ,সু নাগরিক হয় এবং বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম হয় ।
পরিসমাপ্তিতে আশাবাদ ব্যাক্ত করতে চাই যে ,মানবিক সৎ ,এবং সুষম যোগ্যতা সম্পন্ন একটি জাতি গঠনের জন্য যে সকল বাধা রয়েছে সেগুলো দুর হবে এবং সোনার বাংলার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন তা অচিরেই পূর্ন হবে । আমরা একটি সুন্দর ,সুখী ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে সবাই কাজ করবো এই প্রত্যাশা রইল সবার কাছে ।

প্রধান শিক্ষক
রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
আড়াইহাজার-নারায়ণগঞ্জ

সামাজিক যোগাযোগ এ শেয়ার করুন

একই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২১ নরসিংদীর আওয়াজ
Site Customized By Rahat IT Ltd.