1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Narsingdir Awaaz : Narsingdir Awaaz

চাকুরী দেয়ার নাম করে ধর্ষণ ॥ মামলা থেকে বাঁচতে বিয়ে

  • আপডেট সময়: শনিবার, ২১ মে, ২০২২
  • ১৫৫ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিনিধি:
নাম আসমানী (ছদ্দনাম)। নরসিংদী জেলার মাধবদী থানা এলাকায় তাদের বাড়ি। আসমানীর বাবার অভাব অনটনের মধ্যেও লেখাপড়া চালিয়ে যায় আসমানী। একদিন ঘটক বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে বাড়িতে হাজির। ছেলে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক। ঘটকের প্রস্তাবে সহজেই রাজি হয়ে যায় আসমানীর পরিবার। ঘটক পাত্র পক্ষের মোবাইল নম্বর দিয়ে আসে কনে পক্ষকে। এভাবে একদিন দুই দিন করে কথা বলতে থাকলে মেয়েটির অভাবের সংসার দুর করতে চাকরী দাবী করে। প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এই সুযোগটি কাজে লাগায়। ছেলেটি আসামনীকে ঢাকায় তার কারখানায় চাকরী দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের করে। ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই মিরপুরের শাহ আলী মাজার সংলগ্ন একটি হোটেলে নিয়ে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। পরদিন ১৭ জুলাই হোটেল থেকে বের হয়ে আসামানী কান্নাকাটি শুরু করলে আশপাশের মানুষ জড়ো হয়। এই অবস্থায় ধর্ষন মামলা থেকে বাঁচতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৮নং ওয়ার্ডের বিবাহ নিবন্ধক মো: নূর হোসেনের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা কাবিনে বিয়ে হয় তাদের। সেই ছেলেটি আর কেউ নয়, তিনি হলেন নরসিংদী সদর উপজেলার বাগহাটা মিয়াপাড়া গ্রামের সফি মাহমুদের ছেলে মুহাম্মদ মামুন হোসেন পাঠান। ঘরে তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে।
মামুন হোসেন পাঠান সমাজে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত হিসেবে সেখেরচরে তিন্নি থ্রি-পিচ কোম্পানীর মালিক। তিনি নিজ বাড়ির নিচতলায় কারখানা এবং উপড় তলায় মাদরাসাতুল বানাত-আল আরাবিয়্যাহ নামে একটি মহিলা মাদ্রাসা গড়ে তুলেন। এই মাদ্রাসা ও কারখানার আড়ালে তিনি নারীদের জীবন নষ্ট করছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে।
আসামানীর দেয়া তথ্যমতে, বেশকিছুদিন পূর্বে বাগহাটা এলাকার পিতৃহীন (শরিফা ছদ্দনাম) জনৈক এক শিশু মামুনের কারখানায় কাজ করে আসছিল। কিছুদিন যাওয়ার পর তার উপড় চোখ পড়ে মামুনের। তাকে বিয়ে করার আশ্বাসে মামুন মেয়েটির সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। কিছুদিন যাওয়ার পর স্থানীয়দের চাপের মুখে শরিফাকে অন্যত্র বিয়ে দেয়া হয়।
অপরদিকে মামুন আসমানীকে বিয়ে করে ভেলানগর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় উঠে। সেখানে দিন-রাত নিয়মিতই একত্রে বসবাস করতে থাকে তারা। কিছুদিন যাওয়ার পর মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। বাবার বাড়ি চলে যায় আসমানী। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর শিবপুর উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের বিবাহ নিবন্ধক (কাজী) এনামুল হক শাহীনের স্বাক্ষরিত ঠিকানাবিহীন এক তালাক নামা পাঠানো হয় আসামীর বাড়িতে।
মামুনের কু-কীর্তি এখানেই শেষ নয়, মামুনের নারী লিপ্সা থামাতে না পেরে তালাকের পরও আসমানীদের বাড়িতে যাওয়া আসার চেষ্টা করে। এতে স্থানীয়রা নিষেধ করে দিলে পুনরায় তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয় মামুন। যে কথা সেই কাজ। মামুন নরসিংদীর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ঘোষনাপত্র দিয়ে ভবিষ্যতে আসামানীকে সামাজিক মর্যাদা দিয়ে ভরন পোষন করবে ও মারধর করবেনা মর্মে অঙ্গীকার করে। ফলশ্রুতিতে ২০২১ সালের ৩০ জুন পাঁচদোনা ইউনিয়ন বিবাহ নিবন্ধক মো: মুহিবুল্লা’র মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা কােিবন তারা পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
বিয়ের পর মামুন ও আসমানী ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকে। সেখানে কিছুদিন যাওয়ার পর আসামীর বাবার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে এনে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। দরিদ্র বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দিতে রাজি না হওয়ায় মামুন, তার ভাই মনির হোসেন পাঠান ও স্ত্রী আমেনা খাতুন কিল, ঘুষি, লাথি মেরে মারাত্মকভাবে আহত করে। একপর্যায়ে তারা গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। কোন রকমে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেলে ৩ লাখ টাকা নিয়ে বাসায় আসার হুমকি দিয়ে আসমানীকে বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়।
এঘটনায় স্বামী মামুন হোসেন পাঠান, তার ভাই মনির হোসেন পাঠান ও স্ত্রী আমেনা বেগমের নামে ঢাকা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে মুহাম্মদ মামুন পাঠানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিপ্ট করেননি।
এছাড়া স্বামী মুহাম্মদ মামুন হোসেন পাঠানের কাছ থেকে কাবিনের সমুদয় অর্থ পাওয়ার আশায় নরসিংদীর পারিবারিক আদলতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন স্ত্রী আসমানী।
অসহায় ও দুর্বল আসমানীর পরিবারের হওয়ায় তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করার জন্য নরসিংদীতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০৭ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন স্বামী মুহাম্মদ মামুন হোসেন পাঠানের স্ত্রী আমেনা খাতুন। এই অবস্থায় আদালতের কাছে সুষ্ঠ্য বিচার দাবী করেন ভূক্তভোগীর পরিবার।

সামাজিক যোগাযোগ এ শেয়ার করুন

একই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২১ নরসিংদীর আওয়াজ
Site Customized By Rahat IT Ltd.