মকবুল হোসেন মাধবদী নরসিংদী প্রতিনিধি ঃ
নরসিংদীর মাধবদীতে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালনপালনকৃত কোরবানির পশুর বিপুল সমাহার নিয়ে সাকিব এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্ম দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করে আসছে। বিগত দিনের মতো এছর ও প্রায় ৮৫টি দেশীয় গরু কোন ধরনের কৃত্রিম ও ক্ষতিকর মোটাতাজাকরণ ইনজেকশন ছাড়া সম্পূর্ণ দেশীয় ও দানাদার জাতীয় খাবারের মাধ্যমে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। শনিবার (২ জুলাই) সকাল এগারোটার দিকে মাধবদী থানাধীন নূরালাপুর ইউনিয়নের সাকিব এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্ম পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, সুন্দর,সাজানো গোছানো ও মনোরম পরিবেশে সেখানে কোরবানির পশু পালন করা হচ্ছে। প্রবেশ দ্বারেই রয়েছে জীবাণু মুক্তকরণ ঔষধ। সেই ঔষধে পায়ের জুতার নিচের অংশ চুবিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায় সুস্থ, সুন্দর ও সুঠাম দেহের অধিকারী গরু,মহিষ খামারের ভেতরে সারিবদ্ধভাবে বেঁধে রাখা হয়েছে।সামনে খড়,ভুষি ও দানাদার জাতীয় খাবার দিয়ে রাখা হয়েছে। পশুর সার্বক্ষণিক পরিচর্যার জন্য কর্মচারী নিয়োগ করা আছে। তিনি খানিক পর পর গরুর গোবর পরিস্কারের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। ভেতরের কোথাও কোন ধরনের ময়লা বা দুর্গন্ধ নেই। প্রতিটি পশুর মাথার উপর বৈদ্যুতিক ফ্যান ঘুরছে। সর্বোপরি একটি আধুনিক খামারের যে সমস্ত উপকরণ ও সুযোগ সুবিধা থাকার দরকার সাকিব এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্মে তার সকল সুবিধা রয়েছে। এখানের প্রতিটি কোরবানির পশু সুস্থ সতেজ, চমকপ্রদ রং এবং সুঠাম দেহের অধিকারী। আপনারা যে কেউ চাইলে ঘুরে আসতে পারেন আধুনিক এ ফার্মটিতে । সাকিব এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্মের স্বত্তাধীকারী রাজনৈতিক মাঠ চষে বেড়ানো তরুণ উদ্যোক্তা মোঃ আরিফ হোসেন বলেন, আমাদের বাড়ির এ পশু খামারটি বেশ পুরাতন। আমার দাদার আমল থেকে বংশ পরম্পরায় শখের বশে এ খামার পরিচালিত হয় আসছে। দাদার হাত ধরে বাবা এবং বর্তমানে আমি শখের বশে এ খামার পরিচালনা করে আসছি। এটি আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্যের একটি অংশ। আমি আমার সমস্ত আদর যত্ন ও ভালোবাসা দিয়ে পরম যত্নে প্রায় ৮৫ টি কোরবানির পশু পালন পালন করে কোরবানির উপযুক্ত করে তুলেছি। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে আবার ঘুমাতে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আমার সবটুকু সময় আমি এ পশু গুলো লালনের জন্য ব্যায় করি। আমার সবটুকু ভালোবাসা পশু গুলোর জন্য উজাড় করে দিয়েছি। আমার খামারের প্রায় ২৫ শতাংশ কোরবানির পশু ইতোমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বাকি ৭৫ শতাংশ পশু ঈদের পূর্বে বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন,আমার এখানে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১২ লক্ষ টাকা দামের কোরবানির পশু রয়েছে। আমার এখান থেকে কোরবানির পশু কিনে প্রতারিত হওয়ার কোন সুযোগ নেই।আমার খামারের প্রতিটি পশু শতভাগ ভেজালমুক্ত খাবার খাইয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি পশু খাদ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খামারিদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে খামারিদের প্রতি নরসিংদী পুলিশ সুপার আশরাফুল আজীম পিপিএম এর দিকনির্দেশনা ও প্রতিটি থানার অফিসার ইনচার্জদের সঠিক তত্ত্বাবধানের কারণে নতুন করে আশার আলো ছড়িয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার ফোন করে খামারিদের খোঁজখবর নেয়া হয়। তাছাড়া খামারিদের যে কোন ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য হটলাইনের ব্যবস্থা করায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।