মকবুল হোসেন মাধবদী নরসিংদী প্রতিনিধি ঃনরসিংদীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হাজি আব্দুস সালাম (৫৫) নামে এক ব্যাবসায়ীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নরসিংদীর মাধবদী থানাধীন পাইকারচর ইউনিয়নের চরভাসানিয়া ঈদগাহ সংলগ্ন রাস্তায় এঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুস সালাম চরভাসানিয়া এলাকার মৃত আদম আলী প্রধানের ছেলে এবং গোপালদী বাজারের বিশিষ্ট পাইকারি কাপড় বিক্রেতা।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে সরেজমিনে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পুরো বাড়ি জুড়ে শোকের মাতম চলছে। নিহতের স্ত্রী,ছেলে ও মেয়েরা পিতৃ হরতাল বিচার চেয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। নিহতের মেয়ে রুমানা আক্তার, ছেলে আবুল কালাম, ছেলে বউ তানিয়া আক্তার ও এলাকাবাসী জানায়, গত দুই সপ্তাহ পূর্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন মেম্বারের ছেলে মোবারক এর নেতৃত্বে গোপালদী বাজার থেকে ১৫ হাজার গজ কাপড় চুরি হয় । পরবর্তীতে বাজার কমিটি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ হাজী আব্দুস সালামকে সাক্ষী করে মোবারক গংদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। এঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা হাজী আব্দুস সালামকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। এঘটনার জের ধরে আজ সকাল ৯ টার দিকে হাজী আব্দুস সালাম কাপড় কেনার জন্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা নিয়ে অটোরিকশা যোগে তার ব্যবসা স্থল গোপালদী বাজার যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে অটোরিক্সাটি চরভাসানিয়া ঈদগা সংলগ্ন রাস্তায় পোছলে হারুন মেম্বারের ছেলে মোবারক ও হারুন মেম্বারের নেতৃত্বে ফরহাদ, আক্তার, আনোয়ার মেম্বার, আলী, জুনায়েদ, হৃদয় ও রবিউল মিলে তার গতিপথ রোধ করে। এসময় তারা হাজী আব্দুস সালামকে টেনে হিচড়ে অটো থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তারা তার বুকের উপর চেপে বসে এবং বুকের উপর পা দিয়ে সজোরে আঘাত করতে করতে তার পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে ফেলে, ঘাড় মটকে ফেলে এবং বোতল দিয়ে পিটিয়ে পিঠের শিরদাঁড়া ভেঙ্গে মুমূর্ষ অবস্থায় ফেলে চলে যায়। পরে এলাকাবাসী মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাধবদী প্রাইম জেনারেল হাসপাতাল পরে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় । সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের লাশ বর্তমানে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাড়িঘরের সকল আসবাবপত্র ভাঙচুর ও ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে তবে বাড়ির কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় নি। এব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হারুন মেম্বারের মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি এ ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন। এঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।পরবর্তী যে কোন দুর্ঘটনা এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে তার মাথায় পানি ঢালা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। সুতরাং এটা হত্যাকাণ্ড নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু তা এখনো নিশ্চিত নয়। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না বলে ও জানান তিনি।