মনিরুজ্জামান, নরসিংদী প্রতিনিধিঃ “সংঘাত নয়, শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি”- এই শ্লোগানকে নিয়ে নরসিংদী সদর পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি) এর উদ্যোগে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার, সকাল ১১টায় নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি মিলনায়তনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর পবিত্র কোরান থেকে তেলাওয়াত এবং গীতা পাঠ করা হয়।
পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি) নরসিংদী সদর এর অ্যাম্বাসেডর এম মোজাম্মেল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অনলাইনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য খায়রুল কবির খোকন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামি ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুহাম্মদ রফিক উল ইসলাম, ইসলামি ফাউন্ডেশন নরসিংদীর উপপরিচালক মোঃ ইউসুফ আলী, নরসিংদী সাটিরপাড়া কালিকুমার ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু তালেব।
পিএফজি কো-অর্ডিনেটর হলধর দাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতির শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর স্বাগত বক্তব্য রাখেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর এমআইপিএস প্রকল্পের ডেপুটি ডিরেক্টর ড. নাজমুন নাহার নূর লুবনা।
সম্প্রীতির অভিযাত্রা বিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ করেন পিএফজির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শহীদুল্লাহ খন্দকার এবং ঘোষণাপত্র পাঠ করেন নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও পিএফজির সদস্য মোঃ মনিরুজ্জামান।
এসময় পিএফজি’র অ্যাম্বাসেডর মকবুল হোসেন, জেলা পুরোহিত কল্যাণ সমিতির প্রশিক্ষক তপন কুমার আচার্য, বাগহাটা জামে মসজিদের খতিব মুফতি শামসুল ইসলাম সহ বিভিন্ন মসজিদের ইমাম এবং মন্দিরের পুরোহিতরা বক্তব্য রাখেন।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ শান্তি-সম্প্রীতির দেশ। নরসিংদী সদরের শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে সকল ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ একসাথে কাজ করতে হবে। তিনি নরসিংদী সদর পিএফজির নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
খায়রুল কবির খোকন বলেন, নরসিংদী জেলা আবহমান কাল থেকে সম্প্রীতির জনপদ। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে সব সময় তৎপর। এই সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ সবার। আমরা সবসময় এই সম্প্রীতি বজায় রেখে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবো এটাই হোক আমাদের আজকের প্রত্যয়।
মুহাম্মদ রফিক উল ইসলাম বলেন, ইসলামের নবী করিম (সাঃ) এক ইহুদীর লাশের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে অন্য ধর্মের লোকজনের প্রতি মানবিক আচরণের নজির রেখে গেছেন। কারণ, ইসলাম শান্তির ধর্ম। প্রকৃত ধার্মিক কখনো সাম্প্রদায়িক হতে পারে না। আমাদের ইসলামের মর্মবাণী ধারণ করে সকল মানুষকে ভালোবেসে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
পরে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠান থেকে সকল অংশগ্রহণকারী ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদ মুক্ত সামাজিক সম্প্রীতির নরসিংদী সদর গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার্থে সর্বসম্মতিক্রমে ১১ টি ঘোষণা সম্বলিত ঘোষণাপত্রে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীগণ স্বাক্ষর করেন।