প্রিন্ট এর তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২৫, ২:০৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ২৮, ২০২১, ১:২৪ পি.এম
চরম খাদ্য সংকটে বানর লোকালয়ে, জনজীবন বিপর্যস্ত
মনিরুজ্জামান, বার্তা সম্পাদকঃ নরসিংদীর বানর রাজ্যের বানররা ভাল নেই। করোনা পরিস্থিতির এ সময়ে চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার রামপুরের বানর রাজ্যের কয়েক হাজার বানর। চরম সংকটের মধ্যে এ বানররা খাবার না পেয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে কখনো বাড়ি-ঘরে হামলা করেছে আবার কখনো নষ্ট করছে ক্ষেতের ফসল। এ অবস্থায় দ্রুত এদের পূর্ণবাসনের ব্যাবস্থা না নিলে জনজীবনে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
মনোহরদী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে খিদিরপুর ইউনিয়নের নিভৃত এক পল্লী রামপুর। এ গ্রামে যাওয়ার পথে রামপুর বাজারে ঢুকতেই চোখে পড়ে ঘরের চালে, গাছের নীচে কিংবা গাছের উপরে দলবেধে বসে আছে অজস্র বানর। এক দেড়'শ বছর ধরেই মানুষের পাশাপাশি এই গ্রামে বানর বসবাস করে আসলেও বনাঞ্চল কমে যাওয়ায় তারা বেশ কয়েক বছর যাবৎ মোটামুটি খাদ্য সংকটের মধ্যে অতিবাহিত করে আসছিল। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে তা চরম আকার ধারণ করেছে। করোনার এ সংকটময় মুহুর্তে সরকারি- বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে বানরদের জন্য কোনো প্রকার খাবারের ব্যবস্থা না হওয়ায় খাবারের অভাবে বানর গুলো কখনো পথচারী কিংবা বাড়ি ঘরে হামলা করছে। কখনো নষ্ট করে ফেলছে গাছের ফল ও ক্ষেতের ফসল।
হারিছ মিয়া নামে রামপুর বাজারের এক মুদি দোকানী জানান,করোনার এই দেড় বছর সময় কালে রামপুরা এলাকার বানরগুলো চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে। যার ফলে এলাকাবাসী জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বাড়ী-ঘর, দোকানপাটে ঢুকে সব কিছু তছনছ করে যা পাচ্ছে তাই খেয়ে ফেলছে।
হোসনে আরা বেগম নামে এক গৃহিণী জানান, বানরগুলো জন্য ঘরে মধ্যে ভাত রাখতে পারিনা, তরকারী রাখতে পারিনা। এগুলো যখন তখন ঘরের মধ্যে ঢুকে হাড়িপাতিল ওল্টিয়ে সবকিছু খেয়ে ফেলছে।
আমিনুল ইসলাম নামে এলাকার এক শিক্ষক বলেন, ‘ আমি প্রতিদিন বানরগুলোকে খাওয়ার জন্য চিড়া, বিস্কুট কিনে দেই। এতো এতো বানরের মধ্যে আমার এই চিড়া বিস্কুট কি বা হয়। সরকারীভাবে বানরগুলোকে যদি আবাসনের ব্যবস্থা করা হত, নিয়মিত খাবার দেওয়া হত তাহলে এগুলো এলাকার মানুষদের এভাবে জ্বালাতো না।
খিদিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান (জামিল) বলেন, ইউনিয়নের প্রায় ১ থেকে দেড়’শ বছর আগে থেকে বানরের বসবাস। বানর অনেক সময় খাবারের অভাবে বাড়ি ঘরে হামলা করে। সাম্প্রতিক সময়ে চরম আকার ধারণ করেছে। তবে বানরের খাবারের অভাবটি যদি পূরণ হয় তাহলে আমার খিদিরপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের জন্য এটি একটি সম্পদ।
মনোরহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এস.এম. কাসেম জানান, সরকারি ভাবে বানরের খাবারের জন্য বরাদ্ধ কিছু নেই। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যানদের এখানে অন্তর্ভূক্ত করে যাতে স্থানীয় ভাবেই তাদের খাবারের আয়োজনটি হয়। সেজন্য নির্দেশনা দিবো।
সরকারী উদ্যোগে বানরের খাবার ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে বানর সমৃদ্ধ নরসিংদীর এই এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করছেন নরসিংদীর সচেতন মহল।
Copyright © 2025 নরসিংদীর আওয়াজ. All rights reserved.