মকবুল হোসেন মাধবদী নরসিংদী প্রতিনিধি ঃ নরসিংদীর মাধবদী থানাধীন মেনুরকান্দি এলাকায় জোরপূর্বক জমি দখলে রাখতে মোঃ আল-আমিন নামে এক প্রবাসীর নির্মাণাধীন ঘর ভাংচুর করে গুড়িয়ে দিয়েছে তার সৎ মা ফাতেমা বেগম, তার ছেলে সাইদুল ও মকবুল হোসেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে মাধবদী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রবাস ফেরত মোঃ আল-আমিন’র সৎ মা ও তার ছেলেরা মিলে তার নির্মাণাধীন ঘরের পিলার ও টিনের চাল ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে । চালের সমস্ত টিন অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সেখানে শুধু নির্মাণাধীন ঘরের পিলার গুলো উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে। প্রবাস ফেরত আল-আমিন বলেন, আমার পিতার নিকট হতে ২০১৪ সালে ক্রয়কৃত জমিতে বিগত কিছুদিন পূর্বে আমি গৃহনির্মাণ কাজ শুরু করি। নির্মাণ কাজ শুরু করার সময় আমার সৎ মা ও সৎ ভাইয়েরা কোনরকম বাধা দেয় নি। কিন্তু হঠাৎ করে তারা এলাকার কতিপয় অসাধু লোকের পরামর্শে আমার গৃহনির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়ে আমার উপর চড়াও হয়। এসময় তারা আমার নির্মাণাধীন ঘরের চাল খুলে নেয় এবং পিলার গুলো ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে খেলে। এতে আমি বাঁধা দিলে আমার কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এতে আমি বিচলিত হয়ে এলাকাবাসীর শরনাপন্ন হই। তারা উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে আপোষ মীমাংসা করার জন্য দুই দিনের সময় নেয়। তাদের নেয়া সময় শেষ হওয়ার আগেই আমার সৎ মা আমার নামে মাধবদী থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। পরে বাধ্য হয়ে আমি ও তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। আল-আমিন’র পিতা মোঃ আফাজ উদ্দিন বলেন, আমি ব্যবসা করতে গিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে গত ২০১৪ সালে কয়েকটি মামলায় জড়িয়ে পড়ি। উপায়ন্তর না পেয়ে ধার-দেনা মেটানোর জন্য আমার ১ম ও ২য় সংসারের ছেলে মেয়েদের পরামর্শে জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেই। তখন আমার ১ম সংসারের বড় ছেলে মোঃ আল-আমিন বিদেশ থেকে এ কথা শুনে জমি কিনতে রাজি হয়। সেখান থেকে সে ধার-দেনা করে জমির সমুদয় টাকা পরিশোধ করলে সে বিদেশে থাকাকালীন সময়ে আমি তাকে জমি রেজিস্ট্রি করে দেই। তার পাঠানো টাকা দিয়ে আমি সকল পাওনা পরিশোধ করি এবং আমার মেয়েদের বিবাহ দেই। বর্তমানে সে দেশে ফিরে আসলে আমি তার জমি তাকে বুঝিয়ে দিলে সে সেখানে ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করে। কিন্তু আমার ২য় স্ত্রী ও তার সন্তানেরা এতে বাঁধা দিয়ে ঘর ভাংচুর করে আমার ছেলে মোঃ আল-আমিন ও আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আফাজ উদ্দিনের ২য় স্ত্রী ফাতেমা বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আমি এ জমিতে বসবাস করে আসছি। এ জমিতে তারা ঘর বানাবে তা আমরা মেনে নিতে পারিনি তাই রাগে ক্ষোভে ঘর ভেঙ্গে ফেলেছি। এ জমিতে আমার এবং আমার সন্তানদের হক রয়েছে। আমাকে অন্যত্র জমি দিলেও আমি নেব না। আমাকে এখান থেকেই জমি দিতে হবে। মাধবদী থানার এএসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এবিষয়ে উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন । বিষয়টি আমরা তদন্ত করে উভয় পক্ষের কাগজপত্র খতিয়ে দেখেছি। একজন ক্রয় সূত্রে এবং অপরজন দখল সূত্রে মালিক। এব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে তাদের আইনি পরামর্শ দেওয়া হবে বলে ও জানান তিনি।